রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:০৮ অপরাহ্ন
কালের খবর: জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ৫ বছর এবং সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ বাকিদের ১০ বছর করে কারাদন্ড দিয়েছে আদালত।
নারায়ণগঞ্জ বিএনপি’র শীর্ষস্থানীয় নেতারা ঢাকায় অবস্থান করে পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছিলেন। এমনকি তৃণমূল নেতাকর্মীদেরকেও ঢাকায় যাওয়ার আহবান জানিয়েছিলেন। তবে রায় ঘোষণার দিন এর কোনটিই সফল হয়নি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া নিরাপত্তা আর আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের বিভিন্ন স্পটে অবস্থানে হালে পানি পায়নি বিএনপি।
৮ মামলায় প্রায় হাজার খানেক বিএনপি নেতাকর্মীদের আসামী করে মামলা দায়ের করেছিলো পুলিশ। কেন্দ্রীয় বিএনপি’র সহ-আন্তজার্তিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুকুল ইসলাম রাজীব এবং মহানগর বিএনপি’র সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান গ্রেফতারের পর থেকে অন্য নেতারা মুঠোফোনে অথবা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তাদের প্রতিবাদ সেরেছেন।
রায়ের দিন আদালত প্রাঙ্গণে খুব সতর্ক অবস্থানে ছিলো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পুরো জেলা ছাপিয়ে পুরো ঢাকা শহরে নেয়া হয়েছিলো ৩ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। জেলা ও মহানগরের শীর্ষস্থানীয় নেতারা কোথায় অবস্থান করছেন তা নিয়ে সংশয়ে বিএনপি’র তৃণমূল নেতাকর্মীরা। চাচা আপন প্রাণ বাঁচা ফর্মূলা ব্যবহার করেছেন বিএনপি’র শীর্ষস্থানীয় নেতারা।
দলের চেয়ারপারসনের সামনে যখন সাজার খড়গ, তখন চেহারা দেখাতেও বড় ভয় পেয়েছেন জেলার নেতারা। একমাত্র জেলা থেকে রায়ের সময় আদালত পাড়ায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার।
জেলা বিএনপি’র সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ, মহানগর বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট আবুল কালাম, সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামালসহ বেশিরভাগ নেতারই কোন হদিস নেই। এ আচরণে চরম হতাশায় তৃণমূল বিএনপি। তারা বলছেন আমরা আমাদের চেয়ারপারসনের এমন দুঃসময়ে জেলা থেকে একজনও সাহসী নেতা পেলাম না। সবাই নিজের নিরাপত্তা নিয়ে ভাবছেন।
সমালোচনা শুরু হয়েছে আদালত পাড়ায়ও। বিএনপি চেয়ারপারসনের রায় নিয়ে আদালত পাড়ায় বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের লোকদেখানো মিছিল করেছে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা। তবে সেখানে উপস্থিত ছিলেন না বিএনপির কোন সিনিয়র আইনজীবী।
মহানগর বিএনপি’র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন, অ্যাডভোকেট সরকার হুমায়ুন কবির, অ্যাডভোকেট খোরশেদ মোল্লা, অ্যাডভোকেট জহিরুল হক কেউই ছিলেন না এই প্রতিবাদ মিছিলে। আর এতে ক্ষোভ ঝেড়েছেন বিএনপি’র তৃণমূল নেতাকর্মীরা।
নারায়ণগঞ্জে ছাত্রদল, কৃষকদল, মহিলাদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল সহ বেশির ভাগ বিএনপি’র অঙ্গসংগঠনগুলোর যে মেরুদন্ড ভাঙ্গা তা আবারো প্রমাণ হলো। রায়ের দিন তারা সবাই নিজেদের লুকোতে ব্যস্ত ছিলেন। হাস্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে নারায়ণগঞ্জ বিএনপি।
নারায়ণগঞ্জে বিএনপি শক্তিশালী তা আসলে কাগুজে পরিসংখ্যানে। এতোদিন তারা ফটোসেশনের রাজনীতি করেছেন তা আবারো প্রমাণিত হলো। আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক ধারের কাছে বিএনপি আজ বড় অসহায় বলছেন খোদ দলটির তৃণমূল কর্মীরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিএনপি কর্মী বলেন, আসলে বর্তমানে জেলার বেশিরভাগ বিএনপি নেতা সুবিধাভোগী। তারা প্রকৃতভাবে এ দলটির প্রতি ভালোবাসা লালন করেন না।জেলায় দুইটি উপজেলা পরিষদে সরকার দলীয় গৃহপালিত বিএনপি নেতা রয়েছেন। আর মহানগর তো মাত্র ৭ জন নিয়ে প্রতিবাদ মিছিল করেন। জেলা বিএনপির সভাপতি তো পুলিশ দেখলেই কর্মীদের ফেলে ভো দৌড় দেন।